অনুচ্ছেদ “পহেলা বৈশাখ”


পহেলা বৈশাখ

পহেলা বৈশাখ হলো বাংলাভাষী মানুষের একটি সর্বজনীন অনুষ্ঠান। বাংলাদেশে বসবাসকারী প্রতিটি জাতিগোষ্ঠী বিশেষ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে দিনটি উদযাপন করে থাকে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পান্তা ইলিশ খাওয়ার মাধ্যমে বরণ করে নেওয়া হয় বছরের এ দিনটিকে। এ দিনে নারী-পুরুষ সকলেই ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘুরে বেড়ায়। ছেলেরা পরে লুঙ্গি, পাঞ্জাবি এবং মেয়েরা এর লাল পাড়ের সাদা শাড়ী। ধনী - দরিদ্র সকলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে সর্বত্র বিরাজ করে বিশেষ আমেজ। সামর্থ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারে ভালো খাবারের আয়োজন করা হয়। দিনটি উপলক্ষে গ্রাম-বাংলার বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলা বসে। মেলায় ছুটে যায় সব বয়সের সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। শিশু-কিশোরদের অন্যতম আকর্ষণ থাকে সার্কাস ও নাগরদোলা। এ ছাড়া এসব মেলায় কম দামে বিক্রি হয় হস্ত ও মৃৎশিল্পের বিভিন্ন জিনিসপত্র । এলাকাভেদে কোনো কোনো মেলায় স্থান পায় কৃষকদের দৈনন্দিন জীবনের গৃহস্থালি য›ত্রপাতি। এ ছাড়া মেলাগুলোতে বাউল শিল্পীরা বাবরি দুলিয়ে গান শোনায়। গান গুলোতে ফুটে উঠে আমাদের বাঙালি জীবনবোধের নানা দিক । মহাজনেরা সমগ্র বছরের বকেয়া আদায়ের জন্য হালখাতার আয়োজন করে এবং দেনাদারেরা দেনা পরিশোধ করে নতুন খাতায় নাম লেখায়। পার্বত্য চট্রগ্রামের উপজাতীয় সম্প্রদায়ের লোকজনেরা এ দিন রাজদরবারে কর প্রদান করে। দিনটি উপলক্ষে রেডিও, টেলিভিশন প্রচার করে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা এবং পত্রিকাগুলো প্রকাশ করে বিশেষ ক্রোড়পত্র। এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বের হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রায় সকালের অংশগ্র্রহণে বহির্বিশ্ব জানতে পারে অসাম্প্রদায়িকতার এক তীর্থভুমি হলো আমাদের এ বাংলাদেশ। সর্বোপরি, বৈশাখের এ দিনটিতে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ মেতে উঠে বাঁধভাঙা উল্লাসে।

অনুচ্ছেদ “বৈশাখী মেলা”
Previus
একটি শীতের সকাল - অনুচ্ছেদ
Next

Share This Post


Suggestion or Complain

সংবাদ শিরোনাম