অনুচ্ছেদ “বাল্যবিবাহ”
বাল্যবিবাহ
‘বাল্যবিবাহ’ হচ্ছে বয়ঃসন্ধিতে পৌছানোর পূর্বে একজন ছেলে ও একজন মেয়ের বিবাহ ব›ধনে আবদ্ধ হওয়া। গ্রামে এবং শহরের বস্তিগুলোতে চরম দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারের মেয়েদের ১৫ বছরের পূর্বে বিবাহ দেওয়া হয়। এ সমস্ত পরিবারের অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের অন্নসংস্থান ও শিক্ষার ব্যয়ভার বহনে অক্ষম। তাছাড়া চলমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের বিবাহ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। কুসংস্কার , সামাজিক এবং ধর্মীয় রীতিনীতি, মেয়েদের প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টি ভঙ্গি, নারীদের শিক্ষা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণাও বাল্যবিবাহের জন্য দায়ী। বাল্যবিবাহের ফলে নবদম্পতির স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। তারা অপুষ্টি, রক্তস্বল্পতা, আত্মবিলোপ , অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দ এবং অন্যান্য রোগে ভোগে। দ্রুত বার্ধ্যক্যে উপনীত হয়। তাদের স্বাস্থ্যের এরূপ অবস্থায় দুর্বল শিশুর জন্ম হয়, যা প্রসূতি ও নবজাত শিশু উভয়েরই মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই এ ধ্বংসাত্মক প্রথা বন্ধ করতে হবে। ১৮ বছরের পূর্বে কোনো কন্যাসন্তান এবং ২১ বছরের পূর্বে কোনো ছেলে সন্তানের বিবাহ দেওয়া যাবে না। বাল্যবিবাহের সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করতে এবং বাল্যবিবাহকে নিরুৎসাহিত করতে আমাদের সরকার কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যেমন- মেয়েদের বৃত্তি প্রদান, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষা, অধিক নারী শিক্ষিকা নিয়োগ প্রদান ইত্যাদি । সরকারের পাশাপাশি সমাজদেহ থেকে বাল্যবিবাহ নামের দুষ্টক্ষত অপসারণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
Share This Post