বাক্যের গুণ বা লক্ষণ
বাক্যের গুণ বা লক্ষণ
বাক্য যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয়, তাকে বাক্য বলে। তবে কতগুলো পদের সমষ্টিতে বাক্য গুঠিত হলেও যে কোনো পদসমষ্টিই বাক্য নয়। বাক্যের বিভিন্ন পদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বা অন্বয় থাকতে হয়। এছাড়াও বাক্যের অন্তর্গত বিভিন্ন পদ দ্বারা মিলিতভাবে একটি অখন্ড ভাব পূর্ণরূপে প্রকাশিত হলেই তা বাক্য হবে। ভাষার মূল উপকরণ বাক্য এবং বাক্যের মৌলিক উপাদান শব্দ।
সার্থক বাক্যের গুণ বা লক্ষণ একটি সার্থক বাক্য গঠনে তিনটি গুণ থাকতে হবে। যেমন-
১. আকাক্সক্ষা
২. আসত্তি এবং
৩. যোগ্যতা।
১। আকাঙ্খা ঃ বাক্যের অর্থ পরিষ্কাভাবে বোঝার জন্য এক পদের পর অন্য পদ শোনার যে ইচ্ছা তাই আকাক্সক্ষা’। যেমন- ‘সে ভাত খেয়ে.......’ বললে শ্রোতার আগ্রহ সম্পূর্ণ শেষ হয় না। কিন্তু যদি বলা হয়- ‘সে ভাত খেয়ে বাড়ি যাবে’ তাহলে তার আকাক্সক্ষা পূর্ন হবে।
২। আসত্তিঃ বাক্যের অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদ-বিন্যাসই আসত্তি। যেমন- ‘বল মাঠে ছেলেরা খেলে। ’ এখানে যথাযোগ্য আসত্তির অভাবে পদগুলো বাক্য গঠন করেনি। কিন্তু পদগুলোকে সাজিয়ে ‘ছেলেরা মাঠে বল খেলে’ বললে আসত্তি রক্ষিত হয়।
৩। যোগ্যতাঃ বাক্যস্থিত পদসমূহের অর্থগত ও ভাবগত মিলবন্ধনের নামই যোগ্যতা। ‘বর্ষার বৃষ্টিতে প্লাবনের সৃষ্টি হয়’-এটি একটি যোগ্যতাসম্পন্ন বাক্য। কারণ, বাক্যটিতে পদসমূহের অর্থগত এবং ভাবগত সমন¦য় রয়েছে। কিন্তু ‘বর্ষার রৌদ্র প্লাবনের সৃষ্টি করে’ বললে বাক্যটি ভাব প্রকাশের যোগ্যতা হারাবে। কারণ, রৌদ্র প্লাবন সৃষ্টি করে না।
শব্দের যোগ্যতার সাথে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জড়িত থাকে-
ক) রীতিসিদ্ধ অর্থবাচকতাদ,
খ) দুর্বোধ্যতা,
গ) উপমার ভুল প্রয়োগ,
ঘ) বাহুল্য দোষ
ঙ) বাগধারার শব্দ পরিবর্তন এবং
চ) গুরুচন্ডালী দোষ।
ক) রীতিসিদ্ধ অর্থবাচকতাঃ শব্দ সর্বদা প্রকৃতি ও প্রত্যয়জাত অর্থে ব্যবহৃত হয়। তারপর যোগ্যতার দিক থেকে রীতিসিদ্ধ অর্থের দিকে লক্ষ রেখে কতকগুলো শব্দ ব্যবহার করতে হয়। যেমন-
শব্দ | রীতিসিদ্ধ অর্থ | প্রকৃতি+প্রত্যয় | প্রকৃতি+প্রত্যয়জাত অর্থ |
বাধিত | অনুগৃহীত বা কৃতজ্ঞ | বাধ+ইত | বাধাপ্রাপ্ত |
তৈল | তিল জাতীয় | তিল+ষ্ণ | তিলজাত স্নেহ পদার্থ, বিশেষ কোনো শস্যের রস। |
খ) দুর্বোধ্যতাঃ প্রচলিত, দুর্বোধ্য, শব্দ ব্যবহার করলে বাক্য যোগ্যতা হারায়। যেমন- তুমি আমার সঙ্গে প্রপষ্ণ করেছ। (চতুরী বা মায়া অর্থে, কিন্তু বাংলায় ‘প্রপষ্ণ’ শব্দটি অপ্রচলিত।)
গ) উপমার ভুল প্রয়োগঃ ঠিকভাবে উপমা অলংকার ব্যবহার না করলে যোগ্যতার হানি ঘটে। যেমন- আমার হৃদয়- মন্দিরে আশার বীজ উপ্ত হলো। বীজ ক্ষেতে বপন করা হয়, মন্দিরে নয়। কাজেই বাক্যটি হওয়া উচিত : আমার হৃদয়-ক্ষেত্রে আশার বীজ উপ্ত হলো।
ঘ) বাহুল্য দোষঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহারে বাহুল্য দোষ ঘটে এবং এর ফলে শব্দ তাঁর যোগ্যতাগুণ হারিয়ে থাকে। যেমন- দেশের সব আলেমগণই এ ব্যপারে আমাদের সমর্থন দান করেন। ‘আলোমগণ’ বহুবচনবাচক শব্দ। এর সঙ্গে ‘সব’ শব্দটির অতিরিক্ত ব্যবহার বাহুল্য দোষ সৃষ্টি করেছে।
ঙ) বাগধারার শব্দ পরিবর্তনঃ বাগধারা ভাষাবিশেষের ঐতিহ্য। এর যথেচ্ছ পরিবর্তন করলে শব্দ তার যোগ্যতা হারায়। যেমন- ‘অরণ্যে রোদন’ (অর্থ ; নিষ্ফল আবেদন)- এর পরিবর্তে যদি বলা হয়, ‘বনে ক্রন্দন’ তবে বাগধারাটি তার যোগ্যতা হারায়।
চ) গুরুন্ডালী দোষঃ তৎসম শব্দের সঙ্গে দেশীয় শব্দের প্রয়োগ কখনো কখনো গুরুচন্ডলী দোষ সৃষ্টি করে। এ দোষে দুষ্ট শব্দ তার যোগ্যতা হারায়। ‘গুরুর গাড়ি’, ‘শবদাহ’, ‘মড়াপোড়’, প্রভৃতি স্থলে যথাক্রমে ‘গুরুর শকট’, ‘শবপোড়া’, মড়াদাহ’ প্রভৃতির ব্যবহার গুরুন্ডালী দোষ সৃষ্টি করে।
-------------------------------------------
Gazi Online School.com is one of the biggest outstanding Online learning site in Bangladesh. This site has been a hub for knowledge seekers. It is growing with full potential. The lectures are designed for everybody to understand. The best thing about Gazi Online School.com is that it has a panel of teachers who are expert and excelled in their own educational field. The news tab has all the latest news to keep you up to date. Find your desired education at Gazi Online School.com and be a part of the future of education! The study module is divided into different parts – Bangla II, English II, RAJUK College Admission, Cadet College Admission, PEC, JSC, SSC, HSC, NTRCA, government job exams, bank jobs and so forth. Under all these sections, you will find study materials, recent questions and model tests. You can read, practice, take a quiz or sit for a model test for your target exam.Share This Post