সর্বনাম পদ (বিস্তারিত)


সর্বনাম পদ

বিশেষ্যের পরিবর্তে যে পদ বসে, তাকে সর্বনাম পদ বলে। যেমনঃ

আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, তিনি, এ, এই, এরা, সব, সকল, কে, কি, কোন্, কার, কেউ, কিছু, ইত্যাদি। সর্বনাম সাধারণত ইতোপূর্বে ব্যবহৃত বিশেষ্যের প্রতিনিধি স্থানীয় শব্দ।

সর্বনাম পদের শ্রেণিবিভাগ

সর্বনাম পদ সাধারণত দশ প্রকার। যেমন-

১। ব্যক্তিবাচকঃ আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তিনি, তারা ইত্যাদি।

২। আত্মাবাচকঃ স্বয়ং, নিজ, খোদ, আপনি ইত্যাদি।

৩। সামীপ্যবাচকঃ এ, এই, ইহারা ইত্যাদি।

৪। দুরত্ববাচকঃ ঐ, ঐসব, সব।

৫। সাকল্যবাচকঃ সব, সকল, সমুদয, তাবৎ।

৬। প্রশ্নবাচকঃ কে, কি, কোন, কাহার, কিসের।

৭। অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপকঃ কোন, কেহ, কেউ, কিছু।

৮। ব্যতিহারিকঃ আপনা আপনি, নিজে নিজে।

৯। সংযোগজ্ঞাপকঃ যে, যিনি, যারা, যাহারা।

১০। অন্যাদিবাচকঃ অন্য, অপর, পর।

সর্বনামের পুরুষ

পুরুষ’ একটি পরিভাষিক শব্দ। বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়ার পুরুষ আছে। বিশেষণ ও অব্যয়ের পুরুষ নেই।

ব্যাকরণে পুরুষ তিন প্রকার।

যেমন- ১. উত্তম পুরুষ ২. মধ্যম পুরুষ ৩. নাম পুরুষ

১. উত্তম পুরুষঃ স্বয়ং বক্তাই উত্তম পুরুষ। আমি, আমরা, আমাকে, আমাদের ইত্যাদি সর্বনাম শব্দ উত্তম পুরুষ।

২. মধ্যম পুরুষঃ প্রত্যক্ষভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বা শ্রোতাই মধ্যম পুরুষ। তুমি, তোমরা, তোমাকে, তোমাদের, তোমাদিগকে, আপনি, আপনার, আপনারা, আপনাদের, প্রভৃতি সর্বনাম শব্দ মধ্যম পুরুষ।

৩. নাম পুরুষঃ অনুপস্থিত অথবা পরোক্ষভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীই নাম পুরুষ। সে, তারা, তাহারা, তাদের, তাহাকে, তিনি, তাঁকে, তাঁরা, তাঁদের প্রভৃতি নাম পুরুষ। (সমস্ত বিশেষ্য শব্দই নানা পুরুষ)।

পুরুষভেদে ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলোর রূপ

রুপ উত্তম পুরুষ মধ্যম পুরুষ নাম পুরুষ
সাধারন আমি, আমরা, আমাকে, আমাদিগকে, আমাদের , আমার ; কবিতায : মোর, মোরা তুমি, তোমরা, তোমাকে, তোমাদিগকে, তোমার, তোমাদের। সে, তারা, তাহারা, তাকে, তাহাকে, তাহাদিগকে, তার, তাহার, তাহাদের, তাদের।
সম্ভ্রামাত্মক ------ আপনি, আপনারা, আপনাকে, আপনার,আপনাদের তিনি, তাঁরা, তাঁহারা, তাঁদের, তাঁহাদের, তাঁহাকে, তাঁকে, ইনি, এঁর, এঁরা, ইহাদের, এঁদের, ইহাকে, এঁকে, উনি, ওঁর, ওঁরা, ওঁদের।
তুচ্ছার্থক বা ঘনিষ্ঠতাজ্ঞাপক ------ তুই, তোরা, তোর, তোদের তোকে ইহা, ইহারা, এই, এ, এরা, উহা, উহারা, ও পরা, ওদের

সর্বনামের বিভক্তিগ্রাহী রূপ ঃ বাংলা সর্বনামসমূহ কর্তৃকারক ভিন্ন অন্যান্য কারকে বিভক্তিযুক্ত হওয়ার পূর্বে একটি বিশেষ রূপ পরিগ্রহ করে। সর্বনামের এ রূপটিকে বিভক্তিগ্রাহী রূপ বলা হয়। কর্তৃকারকে সর্বনামের মূল রূপটিই ব্যবহৃত হয় এবং একে প্রথমা বিভক্তিযুক্ত একবচন ধরা হয়।

সর্বনামের বিশিষ্ট প্রয়োগ

১. বিনয় প্রকাশেঃ  উত্তম পুরুষের এবচনে দীন, অধম, বান্দা, সেবক, দাস প্রভৃতি শব্দ ব্যবহৃত হয়। যেমন- ‘আজ্ঞা কর দাসে শাস্তি নরাধমে। ‘দীনের আরজ।’

২. কবিতায় ‘আমার’ স্থানে মম.’ ‘আমাদের’ স্থানে মোদের এবং ‘আমরা’ স্থানে মোরা ব্যবহৃত হয়। যেমন- ‘কে বুঝিয়ে ব্যথা মম।’ ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি। বাংলা ভাষা। ‘ক্ষুদ্র শিশু, মোরা করি তোমারি বন্দনা।’

৩. উপাস্যের প্রতি সাধারণত ‘আপনি’ স্থানে ‘তুমি’ প্রযুক্ত হয়। যেমন- (উপাস্যের প্রতি যুক্ত) ‘প্রভু’ তুমি রক্ষা কর এ দীন সেবকে।’ ৪. অভিনন্দন পত্র রচনায়ও অনেক সময় সম্মনিথ ব্যক্তিকে ‘তুমি’ সম্বোধন করা হয়।

৫. তুমি : ঘনিষ্ঠজন, আপনজন বা সমবয়স্ক সাথীদের প্রতি ব্যবহার্য।

তুই : তুচ্ছার্থে ব্যবহৃত হয়, ঘনিষ্ঠতা বোঝাতেও আমরা ‘তুই’ ব্যবহার করি।

অব্যয় পদ -বিস্তারিত
Previus
বিশেষণ পদ (বিস্তারিত)
Next

Share This Post


Suggestion or Complain

সংবাদ শিরোনাম