অনুচ্ছেদ “নারীশিক্ষা”
নারীশিক্ষা
একটি দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি মূলত এর জনসংখ্যার শিক্ষার উপর নির্ভরশীল। আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই হলো নারী। একটি দেশ জনসংখ্যার এই বুহৎ অংশকে এড়িয়ে তার সমৃদ্ধির আশা করতে পাবে না। তাই প্রত্যেক দেশের জন্য নারীশিক্ষা অপরিহার্য। এটি আমাদের দেশেও সার্বিক উন্নয়নের পূর্বর্শত। অধিকন্তু নারীশিক্ষা দেশের স্বাস্থ্য ও পুষ্টিমানের উন্নয়ন ঘটায়। এটি জনসংখ্যা বৃদ্ধি, হ্রাস, অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন প্রচেষ্টাকেও টেকসই করে। বস্তুত এর গুরুত্ব কথায় প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে আমাদের দেশে নারীদের শিক্ষার অবস্থা সন্তোষজনক নয়। নারীশিক্ষার প্রধান অন্তরায় হলো দরিদ্রতা। বাল্যবিবাহও নারীশিক্ষার পথে একটি প্রধান বাধা। এ প্রতিবন্ধকতা গুলোর পেছনে রয়েছে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা, সামাজিক কুসংস্কার এবং রীতিনীতি, মেয়েদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, নারীশিক্ষার প্রতি ভ্রান্ত ধারণা ইত্যাদি। এ সমস্ত প্রতিব›ধকতার কারণে নারীশিক্ষা চরমভাবে বিঘিœত হয়। ফলশ্রুতিতে নারীরা ভোগ করে অশেষ দুঃখ-যন্ত্রনা। তবে, এই সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা যাবে না। এজন্য নারীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। তাদের শিক্ষার ব্যাপারে আমাদেরকে সর্বোচ্চ সচেতন হতে হবে। নারী শিক্ষাকে উৎসাহিত করতে ইতোমধ্যে আমাদের সরকার নারীদের বৃত্তি প্রদান , অধিক নারী শিক্ষিকা নিয়োগ , উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত অবৈতনিক নারীশিক্ষার মতো বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কোনো মেয়েকে ১৮ বছরের পূর্বে বিবাহ দেওয়া যাবে না এবং তার ন্যূনতম শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি, জাতির বৃহত্তর কল্যাণে নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
Share This Post