অনুচ্ছেদ “বিদ্যালয়ের শেষ দিন”
বিদ্যালয়ের শেষ দিন
পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে ক্ষণস্থায়ী মানবজীবনের বাঁকে বাঁকে বহু স্মৃতি জমে থাকে। তেমনি আমার জীবনে বিদ্যালয়ের শেষ দিনের স্মৃতি এক মধুময় অনুভব। তবে এ স্মৃতির সাথে জড়িয়ে রয়েছে বিদ্যালয়ে ছেড়ে আসার বিষাদময় যন্ত্রনা। দিনটি ছিল ২০ জানুয়ারি, সোমবার। সেদিন আমাদের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের বিদায় উপরক্ষে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছি। অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল দশটায়। আমি ঘন্টাখানেক পূর্বেই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে আমার প্রিয় বন্ধুরা একে একে বিদ্যালয়ে এসে হাজির হয়। আমরা সেদিন সবাই একই রঙের পোশাক পরেছিলাম। সকলকে এক সাথে দেখে মনটা আনন্দে নেচে উঠেছিল। তবে ভিতরে ভিতরে কষ্টের যন্ত্রণার ¯্রােতধারাও প্রবাহিত হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল দীর্ঘ পাঁচটি বছর এ বিদ্যালয়ে কতই না সময় কাটিয়েছি। পড়া না পারলে স্যারের পিটুনি, কান ধরে বারান্দায় দাঁিড়য়ে থাকা আরও কত কী! এমন সময় আমার প্রিয় গনিত স্যার সঞ্জয় কুমার আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি স্যারের সাথে দেখা করতেই স্যার আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলেন। আমাকে আশীর্বাদ করলেন। স্যার মঞ্চে উঠে আমাকে কিছু বলার জন্য বললেন্ আমি শুধু একটা কথাই বলেছিলাম,“স্যার , আপনারা সকলেই আামদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি”। সেদিন আমি ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলাম। সকল ব›ধুরা স্যারদের সাতে ছবি তুলেছিলাম, যা দেখলে আজও বিদ্যালয় জীবনের শেষ দিনের স্মৃতি মানসপটে ভেসে উঠা। বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিতে গেলে আমাকে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আমি কখনো ভাবতে পারিনি যে, এই মানুগুলো ও প্রিয় বিদ্যালয়কে এভাবে ছেড়ে যেতে হবে। আর ছেড়ে যাবার যন্ত্রণা যে এত কঠিন হবে তা আগে কখনো বুঝিনি। এ যন্ত্রনার স্মৃতি আজও আমাকে স্কৃতিকাতর করে তোলে। এ স্মৃতি কখনোই ভুলবার নয়।
Share This Post