কর্মকারক (বিস্তারিত)
কর্মকারক
কর্তার করণীয় যা তাই কর্ম । অর্থাৎ যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাকে কর্মকারক বলে। যেমন শরীফ ভাত খায় । এখানে ‘ভাত’ কর্মকারক। ক্রিয়াকে ‘কী বা কাকে প্রশ্ন করলে সাধারণত যে উওর পাওয়া যায় তাই কর্মকারক।
কর্মকারকের প্রকারভেদঃ
ক. সকর্মক ক্রিয়ার কর্মঃ নাসিয়া ফুল তুলছে।
খ. প্রযোজক ক্রিয়ার কর্মঃ ছেলেটিকে বিছানায় শোয়া ও।
গ. সমধাতুজ কর্মঃ ক্রিয়া ও কর্ম যদি একই ধাতু থেকে উৎপন্ন হয়, তাকে সমধাতুজ কর্ম বলে।
যেমন- খুব এক ঘুম ঘুমিয়েছি। কী মারই না মারল। কী হাসিই না হাসলাম। সাধারণত অকর্মক ক্রিয়াই সমধাতুজ কর্ম গ্রহন করে। সেজন্য একে সমধাতুজ কর্ম বা ধাত্বর্থক কর্ম বল্।েযেমন-
ঘ. উদ্দেশ্য ও বিধেয় কর্মঃ দ্বিকর্মক ক্রিয়ার দুটো পরস্পর অপেক্ষিত কর্মপদ থাকলে প্রধান কর্মটিকে বলা হয় উদ্দেশ্য কর্ম এবং অপেক্ষিত কর্মটিকে বলা হয় বিধেয় কর্ম। যেমন-
ঙ.মুখ্য কর্র্ম ও গৌণ কর্মঃ বাক্যে কখন ও কখন ও একই ক্রিয়াই দুটি কর্ম থাকে। এরূপ ক্রিয়াকেই দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। দ্বিকর্মক ক্রিয়ার যে কর্মটি বস্তুবাচক তাকে বলা হয় মুখ্য কর্ম এবং প্রাণিবাচক কর্মটিকে বলা হয় গৌণ কর্ম।
যেমন- রতন আমাকে একটি শার্ট উপহার দিয়েছিল।
এ বাক্যের ‘আমাকে’ মুখ্য কর্ম এবং শাট গৌণ কর্ম।
সাধারণত ক্রিয়াপদকে ‘কী’ দিয়ে প্রশ্ন করলে মুখ্য কর্ম এবং ‘কাকে’ দিয়ে প্রশ্ন করলে গৌণ কর্ম পাওয়া যায়।
চ. উক্ত কর্মঃ কর্তৃবাচ্যে যা কর্ম, কর্মবাচ্যে তাকে উক্ত কর্ম বলে। যেমন- তোমার লেখা হোক, তারপর কলমটা নেব। কর্মকারকে বিভিন্ন বিভক্তির ব্যবহারঃ
ক. প্রথমা বা শূন্য বা অ বিভক্তি : ডাক্তার ডাক। আমাকে একখানা বই দাও। (দ্বিকর্মক ক্রিয়ার মুখ্য কম) রবীন্দ্রনাথ পড়লাম, নজরুল পড়লাম এর সুরাহা খুঁজে পেলাম না। ( গ্রন্থ অর্থে বিশিষ্ট প্রয়োগে)
খ.দ্বিতীয় বা কে বিভক্তি : তাকে বল। রে বিভক্তিঃ আমারে তুমি করিবে ত্রাণ, এ নহে মোর প্রার্থনা।
গ. ষষ্ঠী বা ও বিভক্তিঃ তোমার দেখা পেলাম না।
ঘ. সপ্তমীর এ বিভক্তিঃ জিঞ্জাসিবে জনে জনে।
বিভক্তির সহ কর্মকারকের কিছু উদাহরণঃ
আষাঢ় মাসে নামল ঢল - কর্মে শূণ্য ।
অন্ধজনে দয়া কর - কর্র্মে ৭ মী।
খুব ঠকা ঠকেছি - কর্মে শূণ্য।
মীরা বাগানে ফুল তুলছে - কর্মে শূণ্য।
খুব ঘুম ঘুমিয়েছি - কর্মে শূণ্য।
প্রাণপণে চেষ্ঠা কর - কর্মে ৭মী।
গুরুজনে কর নতি - কর্মে ৭ মী।
তার দেখা পাওয়া দুস্কর - কর্মে ৬ষ্ঠী।
চোর ধৃত হয়েছে - কর্মে শূণ্য।
অর্থ অনর্থ ঘটায় - কর্মে শূণ্য।
জল পড়ে পাতা নড়ে - কর্মে শূণ্য।
ধোপাকে কাপড় দাও - কর্মে ২য়া ডাক্তার ডাক - কর্মে শূণ্য।
পুলিশে খবর দাও - কর্মে ৭মী।
তোমার দেখা পেলাম না - কর্মে ৬ষ্ঠী ।
পাহাড়ে নড়ায় সাধ্য কার - কর্মে শূণ্য।
আমার ভাত খাওয়া হলো না - কর্মে শূণ্য।
বিপদে যেন করিতে পারি জয় - কর্মে শূণ্য।
সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দিব কোথা - কর্মে শূণ্য।
বাজিল কাহার বীণা - কর্মে শূণ্য।
পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল-কর্মে শূণ্য।
মেয়েটি মালা গাঁথে - কর্মে শূণ্য।
রেখ মা দাসেরে মনে - কর্মে ২য়া
শিশূগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে - কর্মে শূণ্য।
রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলি লিখেছেন - কর্মে শূণ্য।
রাখাল গরু চরায় - কর্মে শূণ্য।
মা শিশূকে চাঁদ দেখাল - কর্মে শূণ্য।
Share This Post