ক্রিয়ার কাল-বিস্তারিত


ক্রিয়ার কাল

ক্রিয়া সংঘটনের সময়টাকে অর্থাৎ যে সময়ে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়, সে সময়কে ক্রিয়ার কাল বলে। ক্রিয়ার কাল প্রধানত তিন প্রকার । যথা- বর্তমান কাল, অতীত কাল এবং ভবিষ্যৎ কাল।

১। বর্তমান কালঃ বর্তমানে কোনো কাজ হয় বা হয়ে থাকে এরূপ বুঝালে এর কালকে বর্তমান কাল বলে। যেমন- আমি যাই।

২। অতীত কালঃ কোনো কাজ ভবিষ্যতে ঘটবে বা ঘটতে থাকবে এরূপ বুঝালে এর কালকে অতীত কাল বলে। যেমন- আমি ভাত খেয়েছিলাম।

৩। ভবিষ্যৎ কালঃ কোনো কাজ ভবিষ্যতে ঘটবে বা ঘটাতে থাকবে এরূপ বুঝলে তার কালকে ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমন-আমি কাল ঢাকা যাব। তিনটি কালের প্রত্যেকটিতে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

১. বর্তমান কালঃ ক. সাধারণ বর্তমান বা নিত্যবৃও বর্তমান; খ. ঘটমান বর্তমান ; গ. পুরাঘটিত বর্তমান; ২. অতীত কালঃ ক. সাধারণ অতীত; খ. নিত্যবৃও অতীত; গ.ঘটমান অতীত; ঘ. পুরঘটিত অতীত;

৩.ভবিষ্যৎ কালঃ ক. সাধারণ ভবিষ্যৎ খ. ঘটমান ভবিষ্যৎ গ. পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ

১. বর্তমান কালঃ 

১ সাধাণত বা নিত্য বর্তমানঃ কোনো কাজ বর্তমান সাধারণত হয় বা হয়ে থাকে এরূপ বুঝালে , তার কালকে সাধারণ বর্তমান বাল বলে । যেমন-সে পড়ে। যেমন- সে পড়ে। সাধারণ বর্তমান কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ ক. অনুমতি প্রার্থনায় ভবিষ্যৎ কালের অর্থে এখন তবে আসি। খ. প্রাচীন লেখকের উদ্ধতি দিতে (অতীত কালের অর্থে ) ঃ চন্ডীদাস বলেন, ‘সবার উপরে মানুষ সর্ত্য, তাহার উপরে নাই।’ গ. বর্ণনীয় বিষয়ক প্রত্যেক্ষীভূক করলে অতীতের স্থলে ঃ আমি দেখেছি বাচ্চাটি রোজ রাতে কাঁদে। ঘ. ‘নেই’ ‘নাই বা ‘নি’ শব্দযোগে অতীতের কালের ক্রিয়ার ঃ তিনি গতকাল হাটে যাননি।

সাধারণ বর্তমান কালের বিশেষ দুটি রূপঃ

ক. নিত্যবৃও বর্তমান কালঃ স্বাভাবিক বা অভ্যস্ততা বোঝালে সাধারণ বর্তমান কালের ক্রিয়াকে নিত্যবৃও বর্তমান কাল বলে। যেমন- সন্ধ্যায় সূর্য অন্ত যায়। (স্বাভাবিকতা) আমি রোজ সকালে বেড়াতে যাই। (অভ্যন্ততা)

নিত্যবৃও বর্তমান কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ স্থায়ী সত্য প্রকাশেঃ চার আর তিনে সাত হয়।

কাব্যের ভণিতায়ঃ মহাভারতের কথা অমৃত সমান। কাশীরাম দাস গনে শুনে পূণ্যবান।

অনিশ্চয়তা প্রকাশেঃ কে জানে দেশে আবার সুদিন আসবে কিনা।

ঐতিহাসিক বর্তমানঃ হযরত মুহাম্মদ (স) ৫৭০ খ্রিঃ জন্মগ্রহন করেন। যদি, যখন যেন প্রভৃতি শব্দের প্রয়োগ অতীতে ও ভবিষ্যৎ কাল জ্ঞাপনের জন্য সাধারণ বর্তমান কালের ব্যবহার হয়। যেমন- যদি বৃষ্টি আসে, আমরা বাড়ি চলে যাব। সকলেই যেন সভায় হাজির থাকে। বিপদ যখন আসে, তখন এমনি করেই আসে।

খ. ঐতিহাসিক বর্তমান কালঃ অতীতের কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার যদি নিত্য বর্তমান কালের প্রয়োগ হয়, তাহলে তাকে ঐতিহাসিক বর্তমান কাল বলে। যেমন- বাবারের মৃত্যুর পর হুমায়ুন দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন। ২। ঘটমান বর্তমান কালঃ যে কাজ শেষ হয়নি, এখন ও চলছে, সে কাজ বোঝানোর জন্য ঘটমান বর্তমান কাল ব্যবহৃত হয়। যেমন- হাসান বই পড়ছে। নীরা গান গাইছে।

ঘটমান বর্তমান কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ ক. বক্তা প্রতেক্ষ উক্তিতে ঘটমান বর্তমান কাল ব্যবহৃত হয়। যেমন- বক্তা বললেন, ‘শত্রুর অত্যাচারে দেশ আজ বিপন্ন, ধন-সম্পদ লুন্ঠিত হচ্ছে, দিকে দিকে আগুন জ্বলছে।’’ খ. ভবিষ্যৎ সম্ভবনা অর্থেঃ চিন্তা করো না, কালই আসছি।

৩। পুরাঘটিত বর্তমান কালঃ ক্রিয়া পূর্বে শেষ হলে ও তার ফল এখন ও বর্তমান থাকলে , পুরাঘটিত বর্তমান কাল ব্যবহৃত হয়। যেমন- এবার আমি পরীক্ষায় উওীর্ণ হয়েছি। এতক্ষণ আমি কঙ্ক করেছি।

২. অতীত কাল

১। সাধারণ অতীতঃ বর্তমান কালের পূর্বে যে ক্রিয়া পূর্বে যে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে , তার সংঘটন কাল সাধারণত অতীত কাল। যেমন- প্রদীপ নিভে গেল। শিকারি পাখিটিকে গুলি করল।

সাধারণত অতীত কালের বিশিষ্ট ব্যবহারঃ

ক. পুরাঘটিত বর্তমান স্থলেঃ ‘এক্ষণে জানিলাম কুসুমে কাঁটি আছে।’

খ. বিশেষ ইচ্ছা অর্থে বর্তমান কালের পরিবর্তেঃ তোমরা যা খুশি কর, আমি বিদায় হলাম।

২। ঘটমান অতীতঃ অতীত কালে যে কাজ চলছিল এবং সে সময়ের কথা বলা হয়েছে তখন ও কাজটি সমাপ্ত হয়নি ক্রিয়া সংঘটনের এরূপ ভাব বোঝালে ক্রিয়ার ঘটমান অতীত কাল হয়। যেমন-

৩। পুরাঘটিত অতীতঃ যে ক্রিয়া অততে বহু পূবেই সংঘটিত হয়ে গিয়েছে এবং যার পরে আরও কিছু ঘটনা ঘটে গেছে, তার কালকে পরাঘটিত অতীত কাল বলে। সেবার তাকে ভালো দেখেছিলাম। কাজটি কি তুমি করেছিলে?

ক. অতীতে সংঘটিত ঘটনার নিশ্চিত বর্ণনায়ঃ পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধে এক লক্ষ মারাঠা সৈন্য মার গিয়েছিল। আমি সমিতিতে সেদিন পাচঁ টাকা নগদ দিয়েছিলাম।

খ. অতীতে সংঘটিত ক্রিয়ার পরস্পরা বোঝাতেঃ শেষ ক্রিয়াপদে পুরাঘটিত অতীত কালের প্রয়োগ হয়। যেমন- বৃষ্টি শেষ হবার পূর্বেই আমরা বাড়ি পৌঁছেছিলাম।

৪। নিত্যবৃও অতীতঃ অতীতকালে যে ক্রিয়া সাধারণত অভ্যস্ততা অর্থে ব্যবহৃত হয়, তাকে নিত্যবৃও অতীত কাল বলে । যেমন- আমরা তখন রোজ সকালে নদী তীরে ভ্রমণ করতাম।

নিত্যবৃও অতীত কালের বিশিষ্ট ব্যবহারঃ ক. কামনা প্রকাশেঃ আজ যদি সুমন আসত, কেমন মজা হতো। খ. অসম্ভব কল্পনায় ” ‘সাতাশ হত যদি একশ সাতাশ’ গ. সম্ভাবনা প্রকাশেঃ তুমি যদি যেতে, তবে ভালোই হতো।

৩. ভবিষ্যৎ কাল

১। সাধারণত ভবিষ্যৎ কালঃ যে ক্রিয়া পরে না অনাগত কালে সংঘটিত হবে, তার কালকে সাধারণ ভবিষ্য কাল বলে । যেমন- আমরা মাঠে খেলতে যাব। শীঘ্রই বৃষ্টি আসবে।

সাধারণ ভবিষ্যৎ কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ ক. আক্ষেপ প্রকাশে অতীতের স্থলে ভবিষ্যৎ কাল ব্যবহার হয়। যেমন- কে জানত , আমার ভাগ্য এমন হবে। সেদিন কে জানত যে ইউুরোপে আবার মহাযুদ্ধে ভেরি বাজবে। খ. অতীত কালের ঘটনা সম্পর্কিত যে ক্রিয়াপদে সন্দেহের ভাব বর্তমান থাকে, তার বর্ণনায় সাধারণ ভবিষ্যৎ কালের ব্যবহার হয়। যেমন- ভাবলাম, তিনি এখন বাড়ি গিয়ে থাকবেন। তোমরা হয়ত ‘বিশ্বনবি’ পড়ে থাকবে।

২। ঘটমান ভবিষ্যৎঃ কোন কাজ ভবিষ্যৎ কালে চলতে থাকবে বুঝালে তার কালকে ঘটমান ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমন- ছেলেরা খেলতে থাকবে।

ঘটমান ভবিষ্যৎ কালের ক্রিয়ার রূপঃ নাম পুরুষ সাধারণঃ- ইতে থাকিবে/ - তে থাকবে। (করিতে থাকিবে / করতে থাকবে)। নাম পুরুষ ও মধ্যম পুরুষ সন্ত্রমাত্মকঃ -ইতে থাকিবেন/ তে থাকবেন। (করিতে থাকিবেন/ করতে থাকবেন)।

মধ্যম পুরুষ সাধারণঃ  ইতে থাকিবে / তে থাকবে। (করিতে থাকিবে / করতে থাকবে)।

উওম পুরুষঃ  ইতে থাকিব/-তে থাকব। (করিতে থাকিব/ করতে থাকব)। মূল ক্রিয়ার সঙ্গে অসাপিকা ইতে-তে বিভক্তি যুক্ত হয় এবং এবং সেই সঙ্গে থাক ধাতুর সাধারণ ভবিষ্যৎ কালের ক্রিয়া বিভক্তি যুক্ত হয়।

জ্ঞাতব্যঃ মূল ধাতুর সঙ্গে ইতে/তে বিভক্তি যোগে যে অসমাাপিকা ক্রিয়া সৃষ্টি হয় তা অপরিবর্তনীয় এবং কোনো কালবাচক নয়। মূল ধাতুর সঙ্গে ভবিষ্যৎ কালের কোনো রূপ ক্রিয়া বিভক্তির যুক্ত হয় না।

৩। পুরাঘটিত ভবিষ্যৎঃ ভবিষ্যতে কোনো কাজ নিষ্পন্ন হয়ে থাকবে বুঝালে তার কালকে পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমন- আমি কাজটি করে থাকবো। পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ কালের অর্থ প্রকাশের জন্য মূল ধাতুর সঙ্গে অসমাপিকা ক্রিয়া বিভক্তি ইয়া-এ যোগ করে এবং যাক্ ও গম্ ধাতুর সঙ্গে সাধারণ ভবিষ্যতের ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত করে যৌগিক ক্রিয়াপদ তৈরী হয়। যেমন-






------------------------------------------------------------------------------------------------

Gazi Online School.com is one of the biggest outstanding Online learning site in Bangladesh. This site has been a hub for knowledge seekers. It is growing with full potential. The lectures are designed for everybody to understand. The best thing about Gazi Online School.com is that it has a panel of teachers who are expert and excelled in their own educational field. The news tab has all the latest news to keep you up to date. Find your desired education at Gazi Online School.com and be a part of the future of education! The study module is divided into different parts – Bangla II, English II, RAJUK College Admission, Cadet College Admission, PEC, JSC, SSC, HSC, NTRCA, government job exams, bank jobs and so forth. Under all these sections, you will find study materials, recent questions and model tests. You can read, practice, take a quiz or sit for a model test for your target exam. The site is a hub for students who want to excel in their Academic and different competitive exams.

পুরুষ- বিস্তারিত
Previus
ক্রিয়ার ভাব
Next

Share This Post


Suggestion or Complain

সংবাদ শিরোনাম