ভাবসম্প্রসারণ “ধ্বনিটিরে প্রতিধ্বনি সদা ব্যঙ্গ করে ধ্বনির কাছে ঋণী সে যে পাছে ধরা পড়ে।”
ধ্বনিটিরে প্রতিধ্বনি সদা ব্যঙ্গ করে ধ্বনির কাছে ঋণী সে যে পাছে ধরা পড়ে।
মূলভাব: অকৃতজ্ঞ উপকারীর ঋণ স্বীকার করে না, বরং তার ক্ষতি সাধনে সর্বদা তৎপর থাকে। সম্প্রসারিত ভাব: প্রতিধ্বনির নিজস্ব কোনো অস্তিত্ব নেই। ধ্বনি থেকেই প্রতিধ্বনির সুষ্টি। তাই প্রতিধ্বনি ধ্বনির নিকট ঋণী। কিন্তু প্রতিধ্বনি ধ্বনির এই ঋণকে স্বীকার করতে চায় না। সে যে ধ্বনি থেকে জন্মলাভ করেছে এবং ধ্বনির নিকট ঋণী এ সত্য পাছে অপরের কাছে ধরা পড়ে এ বয়ে সে একে ঢেকে দেওয়ার জন্য দূর থেকে ধ্বনিকে ব্যঙ্গ করে জানাতে চায় যে, সে কারও নিকট ঋণী নয়: কেউই তাকে জন্ম দেয়নি সে স্বয়ম্বব উপকারীর উপকারকে অস্বীকার করার এ এক হাস্যকর পন্থা। আমাদের সমাজেও এমনি একশ্রেণীর লোক দেখা যায়- যারা সব সময় উপকারীর উপকারকে অস্বীকার করে আত্মক্ষমতাকে সাড়ম্বরে প্রচার করতে চায়।তাদের উন্নতি ও প্রতিপত্তির মূলে যে চিহ্নটিকে নিশ্চিহ্ন করতে অকৃতজ্ঞতার আশ্রয় গ্রহন করে। যে উৎস মানমর্যাদা বড়বে বলে তারা মনে করে। কিন্তু তাতে উপকারীর মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় না বরং অকৃতজ্ঞদের অকৃতজ্ঞতার স্বরূপই আরও প্রফট হয়ে উঠে। তার চেয়ে অকুন্ঠচিত্তে উপকারীর ঋণ স্বীকার করাই মানবোচত পন্থা। তাতে উপকৃত ব্যক্তি হীনম্মন্যতা বোধ থেকে মুক্তি পায়, তার মর্যাদার বৃদ্ধি পায়। মন্তব্য: ঋণ স্বীকারে অগৌরবের কিছুই নেই। জীবনে উন্নতির মূলে স্বীয় প্রচেষ্টা, স্বকীয়তা ও সুদৃঢ আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি অপরের যে দয়া দাক্ষিন্য রয়েছে তা মেনে নেওয়ার মধ্যেই মহানুভবতার পরিচয় মেলে।
Previus
Next
Share This Post