ভাবসম্প্রসারণ “প্রয়োজনে যে মরিতে প্রস্তুত বাঁচিবার অধিকার তাহারই।”
প্রয়োজনে যে মরিতে প্রস্তুত বাঁচিবার অধিকার তাহারই।
মূলভাব: ন্যয় ও সত্যের জন্য যারা হাসিমুখে জীবন উৎসর্গ করেন, তাঁরাই প্রকৃতপক্ষে অমরত্ব লাভের অধিকারী। সম্প্রসারিত ভাব: মৃত্যু অনিবার্য সত্য। তারপরও বেঁচে থাকার জন্য মানুষের রয়েছে চিরন্তর আগ্রহ। মৃত্যু ভয়ে ভীত ব্যক্তি কাপুরুষ এবং নিন্দার্হ। মৃত্যুই মানুষকে বাচিঁয়ে রাখতে পারে। এমন ভাবনা থেকেই আধুনিক কবি জীবনানন্দ দাশ বলেছেন, “মৃত্যুর পরও মানুষ বেঁচে থাকে।” এ বেঁচে থাকাই যথার্থ বাঁচা । মৃত্যুকে এড়িয়ে চললে, মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচা যায় না। সম্মানের সঙ্গে আমরা যদি তার কাছে মাথা নত করি তাহলেই মৃত্যুও মধ্য দিয়ে আমরা মৃত্যুঞ্জয়ী হতে পারব। যে যথার্থ মানুষ, সে, মৃত্যুকে বন্ধু ভেবে জীবনকে সার্থকতায় ভরে তুলতে চায়। জীবনের প্রয়োজনে মৃত্যু অপরির্হায। তাই বাঁচার প্রয়োজনে মৃত্যুকে হাসিমুখে বরণ করা মানুষের অবশ্য কর্তব্য। ফ্রাঙ্কলিনের কথায়, “মানুষ না মরা পর্যন্ত পরিপূর্ণভাবে জন্মলাভ করে না।” পৃথিবীতে যে সব মহামানব স্বীয় কর্মের দ্বারা প্রতঃ¯মরণীয় হয়ে আছেন, তাঁরা সবাই মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে অমর আসনে সকল মানুষের অন্তরে ঠাই করে নিয়েছেন। মৃত্যু মহান । তাই মৃত্যুর জন্য তৈরি ব্যক্তিই যথার্থভাবে বাঁচার অধিকারী । কবির কথায়-
“মৃত্যুকে যে এড়িয়ে চলে মৃত্যু তারেই টানে, মৃত্যুকে যারা বুক পেতে লয় বাচঁতে তারাই জানে।”
মন্তব্য: পৃথিবীতে যাঁরা ন্যায় ও সত্যের জন্য হাসিমুখে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁরা আজও আমাদের মাঝে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে রয়েছেন। তাই ন্যায় ও সত্যের পথে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ব্যক্তিই যথাযথভাবে বাঁচার অধিকারী।
Previus
Next
Share This Post