ভাবসম্প্রসারণ “মানুষ যেদিন পরের জন্য কাঁদতে শেখে, সেদিন তার দেবত্ব লাভ হয়।”
মানুষ যেদিন পরের জন্য কাঁদতে শেখে, সেদিন তার দেবত্ব লাভ হয়।
মূলভাব: পরোপকারের মধ্যেই মানব জীবনের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত। পরের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার মধ্যে দিয়েই প্রকৃত দেবত্ব লাভ করা সম্ভব। সম্প্রসারিত ভাব: কর্মময় এ পৃথিবী। এ পৃথিবী প্রতিটি অনুকণায় মিশে আছে কতই না হাসি - কান্না , মান অভমান, ও আনন্দ - বেদনা। কিন্তু এসব কিছু যদি নিজের জন্য না হয়ে পারের জন্য হয় তাহলে তা স্বীকৃতি পায় মহৎ কর্ম হিসেবে। সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ অন্য সকল প্রাণীর চেয়ে আলাদা। তবে ভোগাকাংক্ষা, ক্ষমতালিপ্সা ও স্বার্থরক্ষার ব্যাপারে মানুষ কখনও লোভী, আত্মকেন্দ্রিক, ক্ষুদ্রচেতা ও পশুর ন্যায় হিংস্র হয়ে উঠে। তখন তারা হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যে কোনো ধরনের কাজ করতে পারে। জনকল্যাণ তথা মানবতার মুক্তির গান তাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করে না। কিন্তু জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য তা নয়। মানবতাবোধে উদ্বদ্ধ হয়ে অপরের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করার মধ্যেই মনুষ্যত্বের প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশ পায়। পরহিত ব্রতে উৎসর্গক্রিত জীবনের সার্থক প্রতিনিধি ফুল, নদী, বৃক্ষ গাভী ইত্যাদি। এরা কখনো নিজেদের প্রয়োজনে আসেনা। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) সহ সকল মহামানব যুগে যুগে নিজেদের জীবন সাধনা শক্তি ও সময় পরের কল্যাণে ব্যয় করেছেন। তাঁদের চিন্তা চেতনা শুভ কামনা আবিস্কার অনুসদ্ধিৎসু মনের উপলব্ধি সবই অপরের পন্য রেখে গেছেন। তাই নিজের জন্য ব্যাকুল না হয়ে বিশ্ব-মানবের কল্যাণের জন্য হতে হবে নিবেদিত প্রাণ। আর যে দিন তা করা যাবে সিদিনই সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে আসা যাবে এবং পাওয়া যাবে স্বর্গীয় ছোঁয়া। মন্তব্য: পরের দুঃখ কষ্ট যখন মানুষ হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে শেখে এবং সে দুঃখ কষ্ট নিজের বলে বোধ করে তখনই সে দেবেমানবের মর্যাদা লাভ করে।
Previus
Next
Share This Post