ভাবসম্প্রসারণ “পাপী নয় পাপকে ঘৃণা কর।”
পাপী নয় পাপকে ঘৃণা কর।
মূলভাব: ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ মানুষ কখনও ঘৃণার্হ হতে পারে না। বরং তার দুষ্ট কর্মকেই আমাদের ঘৃণা করা উচিত। সম্প্রসারিত ভাব: মানুষ নিষ্পাপ পৃথিবীতে আসে। ধীরে ধীরে সে বড় হয়। তার চাহিদার বিস্তৃতি ঘটে। কিন্তু অনেক সময়ই তার চাওয়া ও পাওয়ার মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়। না চাইতেই যে পায় সে হয়তো এ সংঘাতকে এড়াতে পারে। কিন্তু যে শিশু জন্মের পর থেকে বা পরবর্তীতে বিরূপ পরিবেশ বড় হয়, দুঃখ-কষ্ট, ক্ষুধা আর নির্যাতনের সাথে যার বাস, জীবনের প্রয়োজনে তার পক্ষে সমাজের নিষিন্ধ পথে, পাপের পঙ্কিল পথে পা বাড়ানো অস্বাভাবিক নয়। বাধ্য হয়েই সে পাপী হয়। কিন্তু জন্মেয় সময় তো সে পাপী ছিল না। বরং পরিবেশের প্রতিকূলতাই তাকে পাপী করেছে। অনুকূল পরিবেশ পেলে,একটু স্নেহ -ভালোবাসার পরশ পেলে হয়তোবা তার হৃদয়ে সৃষ্টি হতে পারে অনুতাপের অমিয় ধারা। হয়তোবা সেই অমিয় ধারায় স্নান করে সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে এক সময়। এভাবে সমাজের বন্ধুর পথে চলতে গিয়ে বিপথগামী হওয়া ব্যক্তিদের সুপথে ফিরিয়ে এনে সমাজকে কলুষমুক্ত করা অসম্ভব কোনো কাজ নয়। শত খুনের নায়ক ইহিহাসখ্যাত হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া বা উন্মুক্ত তরবারি হাতে নবিজি (স.)-কে হত্যা করতে যাওয়া ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর (র.) তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কিন্তু পাপীকে ঘৃণা করে সমাজকে কলুষমুক্ত করা সম্ভব নয়। আর তাই মায়ের ঘৃণা সন্তানের বিরুদ্ধে নয়, সন্তানের গায়ে মাখা মলের বিরুদ্ধে; সাবানের জেহাদ কাপড়ের বিরুদ্ধে নয় ময়লার বিরুদ্ধে। মন্তব্য: অপরাধীকে ঘৃণা না করে তার পুর্নবাসনে এগিয়ে এলে সমাজে অপরাধীর সংখ্যা হ্রাস পাবে। তাই আমাদের সকলের উচিত পাপীকে নয়,পাপকে ঘৃণা করে পাপীকে পাপমুক্ত হতে সহায়তা করা।Previus
Next
Share This Post