একটি সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র। গাজী অনলাইন স্কুল।
একটি সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র।
উত্তরা, ঢাকা, ১২২৯
১৩ই ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ইং
প্রিয় নোমান,
শুভেচ্ছা রইল। আশা করি ভালো আছিস। গতকাল তোর চিঠি পেয়েছি। দোস্ত, আমার কিন্তু মনটা বেশি ভালো নেই, শরীরটাও তেমনি। কারণটা বলছি -
আমি গত পরশুদিন আমার নানার বাড়ি ছিলাম। সেদিন সকালের দিকে জহির মামার সাথে তাহেরপুর বাজারে যাচ্ছিলাম। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক আগের চেয়ে উঁচু ও চওড়া করা হয়েছে। গাড়িও চলে ভীষণ জোরে। তাই মহাসড়কে উঠে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছি। এক সময় একটি পাঁচ-ছয় বছর বয়সের ছেলে হঠাৎ দৌ’ড় দিয়ে রাস্তা পার হয়ে গেল, আর তখনই তাকে অনুসরণ করে একই বয়সের আরেকটি মেয়ে দৌ’ড় দিচিছল। আর দুটি বাস সমান তালে পাল্লা দিয়ে পাশাপাশি এগিয়ে গেল। বাস দুটো যত জোরে আসছিল তাতে মেয়েটি রাস্তার মাঝামাঝি থাকতেই চলন্ত বাসের চাকায় পিষ্ট হতো। মেয়েটি ভীষণ ভয় পেয়ে কেঁদে ফেলল। তাকে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে বললাম। কিন্তু যার মৃত্যু লেখা হয়ে গেছে তাকে বাঁচায় কার সাধ্য। বাস এতজোরে আসছিল যে, পাশ কাটিয়ে যাবার সময় একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে শাঁ করে বেরিয়ে গেল। রিকশার চালক উড়ে গিয়ে সড়কের পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ল, দুমড়ানো রিকশার পাশে কালো রাস্তাতে লাল রঙের স্রোত বইছে, নিঃসার পড়ে আছে মেয়েটি। আমি সামনে এগিয়ে গেলাম মেয়েটির মাথা পিষে চ্যাপ্টা হয়ে গেছে, আর রক্তের একটা উষ্ণ গন্ধ আমার নাকে প্রবেশ করতেই হড়হড় করে বমি আসতে চাইল। আমি আর সেখানে থাকতে পারছিলাম না। পরে জহির মামার কাছে শুনেছি সেই রিকশার চালক পানিতে পড়ার কারণে বেঁচে গিয়েছিল। অথচ যার মরবার কথা ছিল না সে-ই মরে গেল। তাই বাড়িতে আসবার পরও ক্ষণে-ক্ষণে সে-দৃশ্যটি আমার মনে পড়ছে। কিন্তু কাউকে বলতে পারছিলাম না। তোকে জানাতে পেরে নিজেকে অনেকটা হালকা মনে হচ্ছে। তোর মনটা হয়তো খারাপ করে দিলাম, কিন্তু এ ছাড়া আর কার কাছে এভাবে বলতে পারতাম বল ?
আজ আর নয়। তোর অনুভূতি জানিয়ে চিঠি দিস, অপেক্ষায় থাকব। ক্লাস কবে থেকে শুরু হবে জানাবি।
ইতি তোমারই বন্ধু
রবিন
[এখানে খাম আঁকতে হবে]
Previus
Next
Share This Post