ভাবসম্প্রসারণ "অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে তৃণ সম দহে।"
অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে তৃণ সম দহে।
মূলভাবঃ অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী উভয়েই সম অপরাধে - অপরাধী। সময়ের ব্যবধানে তাদের ধ্বংস অনিবার্য। সম্প্রসারিত ভাবঃ ভালো - মন্দ, ন্যায় - অন্যায মানুষের আচরণগত বিপরতিধর্মী দুটি দিক। কেউ কেউ ব্যক্তি বা সমাজীবনের বৃহত্তর কল্যান ও সামজিক শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ভালো ও ন্যায় কাজ করে, আবার কেউ কেউ বিপরীতমুখী হয়। বস্তুত আমাদের সমাজের অন্যায় প্রবণ মানুষ সংখ্যায় কম হলেও তারা বৃহত্তম সুশীল সমাকে জিম্মি করে রাখে। তারা অন্যকে অহেতুক উৎপীড়ন করে, অন্যের অধিকারে অন্যায় হস্তক্ষেপ করে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণে সামাজিক শৃঙ্খলা নস্যাৎ করে। এরা সমাজের চোখে অন্যায়কারী এবং আইনের চোখে অপরাধী। এদের অপরাধ অবশ্যই দন্ডনীয়।কিন্তু মানুষ বিবেকবান হিসেবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অধিকারী হলেও অনেক সময় নানা কারণে দিনের পর দিন অন্যায় সহ্য করে যায়। এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সৎসাহস তাদের থাকে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদহীন নির্লিপ্ততা প্রকারন্তরে অন্যায়কারীকে আরও বেপরোয়া করে তোলে। দিনে দিনে বাড়ে তার শক্তি সাহস । সাধারণ মানুষ মেরুদন্ডহীনের মতো মুখ বুজে থাকতে বাধ্য হয়। জগতের শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ বিধাতার প্রতিনিধিরূপে ন্যায় অন্যায় মূল্যানের মাধ্যমে অন্যায় কাজ ও অন্যায় চিন্তা থেকে বিরত থাকবে। ক্ষমাশীলতা মানুষের একটি সহৎ গুণ। কিন্তু ক্ষমারও একটা বিশেষ সীমা থাকা প্রয়োজন। অন্যায়কারীকে ক্ষমা করার মাঝে কোনো মহত্ব নেই। নেই কোনো কৃতিত্ব। যারা এদের ক্রমাগত ক্ষমা করে প্রশ্রয় দেয় তাদের অপরাধ ও কম নয়। কেননা অন্যায়কারীর মতোই অন্যায়কে প্রশ্রয়দানকারী সমান অপরাধে অপরাধী। মনীষী গ্যাটে বলেন, “যখন তোমার পাশে কোনো অন্যায় অবিচার সংঘটিত হয়, তুমি যদি সেই অন্যায়ের বিরেধিতা না কর, তাহলে তুমি তোমার কর্তবোর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।” মন্তব্যঃ অন্যায়কে সর্বশক্তি দিযে প্রতিহত করতে হবে। ক্ষমা যেখানে দুর্বলতা সেখানে অত্যন্ত কঠিন হতে হবে।
Previus
Next
Share This Post