ভাবসম্প্রসারণ “আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি।”
আলস্য এক ভয়ানক ব্যাধি।
মূলভাব: অলসতা আমাদের জীবনে এক মারত্মক ব্যাধি। দৈহিক রোগ যেমন আমাদের জীবনকে পঙ্গু করে ফেলে, তেমনি অলসতাও আমাদেরকে শ্রমবিমুখ করে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে ঠিলে দেয়। অলস ব্যক্তি জীবনে কখনও উন্নতি করতে পারে না। জীবনে উন্নতি ও সাফল্যের মূলে রয়েছে পরিশ্রম। পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত বেশি উন্নত । সম্প্রসারিত ভাব: আলস্য বলতে শ্রমবিমুখতা বা কাজ করার ইচ্ছা না থাকাকে বোঝায় । আলস্য সব উদ্যমকে ধ্বংস করে, মানুষকে করে পঙ্গ্ ুআলস্য যে কোনো ব্যধির মতোই সংক্রামক ও ধ্বংসকারী। অলস ব্যক্তি জীবনে প্রতিষ্ঠা পায় না, সে হয় নিষ্কর্মা। কথায় বলে, ‘‘আলস্য দোষে আকর”। অলসতা মানুষের দেহ ও মনে জড়তা আনে। ব্যধিগ্রস্ত মানুষ যেরূপ অপরের সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না, তেমনি অলস ব্যক্তিও অকর্মণ্য হয়ে পড়ে। সমাজে এদেরকে পরগাছের মতো অপরের দয়ার ওপর বেঁচে থাকতে হয়। দেশ ও জাতির কোনো মঙ্গল সাধন তো তারা করতেই পারে না বরং তারা অক্ষম ও পঙ্গু হয়ে পড়ে এবং দেশ ও জাতির বোঝা হয়ে এক দুঃখময় জীবনযাপন করে। কথায় আছে, ‘অলস মস্তিক শয়তানের আস্তানা।’ অলস ও অকর্মণ্য ব্যক্তিরাই সমাজে সকল অনাচার ও কুকর্মের উদ্ভাবক। ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তি যেমন সমাজের রোগ বিস্তারে সহায়তা করে, তেমনি অলস ও অকর্মন্য লোক নানা কুচিন্তা ও কুকাজ দ্বারা সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও অশান্তি ডেকে আনে। অলস লোকের সংস্পর্শে এসে কোনো কর্মঠ ব্যাক্তিও অলস হয়ে যেতে পারে। তবে কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিতে হয়। কিন্তু বিশ্রাম আর অলস্য এক কথা নয়। বিশ্রাম কাজেরই একটা অঙ্গ। শক্তি সঞ্চয়ের জন্য বিশ্রামের প্রয়োজন অপরিহার্য। তবে বিশ্রামের যদি নির্দিষ্ট সময় না থাকে, তা যদি হয় কাজ চলাকালীন, তবে তা অবশ্যই আলস্যের নামান্তর। আর এ আলস্য অন্য সব কঠিন রোগের মতোই ভয়ানক ও মারত্মক। মন্তব্য: আমাদের উচিত সব সময় অলসতা পরিহার করে কঠোর শ্রমের মাধ্যমে নিজেদেরকে দেশের যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা।
Previus
Next
Share This Post