ভাবসম্প্রসারণ “কর্তব্যের কাছে ভাই বন্ধু কেহই নাই।”
কর্তব্যের কাছে ভাই বন্ধু কেহই নাই।
মূলভাব: কর্তব্যের কঠিন পথ প্রেম-ভালোবাসা ও স্নেহ বন্ধনের ঊর্ধ্বে। সমস্ত সংকীর্ণতাকে পরিহার করে কর্তব্যকে বড় করে দেখার মধ্য দিয়েই প্রকাশ ঘটে মনুষ্যত্বের, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্বের।সম্প্রসারিত ভাব: আল্লাহর সৃষ্টি অন্যান্য জীবের সাথ মানুষের পার্থক্য এই যে, মানুষ তার আপন দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। তাই জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কর্তব্য পালন মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানব জীবনে মৃত্যু যেমন এক অমোঘ সত্য তেমনি কর্তব্যের আহ্বানে সাড়া দেওয়া মানব জীবনেরই অংশ। কর্তব্যবোধই মানুষকে সত্যিকারের মনুষরূপে চিনতে সহায়তা করে। দোলনা থেকেই ছোট্ট মানব শিশুটি ধীরে ধীরে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে থাকে। এমনিভাবে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও কর্তব্য পালনের মাধ্যমে সে গড়ে তোলে পরিবার , সমাজ, রাষ্ট্র ইত্যাদি। মূলত মানব জীবনটাই নানবিধ কর্তব্যের জালে আবদ্ধ। যেমন- সন্তান-সন্ততির প্রতি বাব-মায়ের , সমাজের প্রতি সমাজপতিদের এবং গরিবের প্রতি ধনীর কর্তব্য আবহমান কাল ধরে চলে আসছে। এসব কর্তব্য কর্মকে বাদ দিয়ে জীবনের সার্থকতা খুঁজতে যাওয়ার নিছক মূর্খতা ছাড়া আর কিছু নয়। মানবিক সম্পর্কে কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা । বন্ধু- বান্ধব, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী প্রভৃতি সম্পর্কের ঊর্ধ্বে থেকে কর্তব্য পালন মনুষ্যত্বেরই পরিচায়ক। দেশ মাতৃকার ডাকে সাড়া দেওয়া, সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, অন্যায় ও অসত্য থেকে দূরে থাকা প্রভৃতি কর্তব্য পালনে মানুষকে নানবিধ স্বজনপ্রীতির নিগড়ে আবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু যর্থাথ কর্তব্য পালনে এ বাধা অতিক্রম করে যেতে হবে অনায়াসে।
মন্তব্য: সত্যনিষ্ঠ ন্যায়বান মানুষ কখনো কর্তব্যকে বিসর্জন দেয় না। কর্তব্যের সামনে সকল সম্পর্ককে উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করার মাধ্যেই যথাযথ মনুষ্যত্বের প্রকাশ, বিশ্বমানবতার কল্যাণ নিহিত।Previus
Next
Share This Post