মাদকদ্রব্যের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ভাষণ রচনা
মাননীয় সভাপতি, সম্মানিত প্রধান অতিথি, সেমিনারের বিশেষ অতিথি, সমবেত সুধীমন্ডলী এবং উপস্থিত আগামী দিনের জাতির প্রত্যাশা, কর্ণধার ও চালিকাশক্তি য্বুক ভাইয়েরা, আমার সালাম গ্রহণ করুন।
মাদকাসক্তির বিষাক্ত ছোবল আমাদের দেশের যুব সমাজকে গ্রাস করতে ধেয়ে আসছে। মাদক এক অশুভ শক্তি অভিশাপ। বিস্ময়কর মানবসভ্যতা যখন সহ¯্রাব্দে এসে নতুন সম্ভাবনায় চারদিক ভরিয়ে তুলছে ঠিক সে সময় আমাদের সম্ভাবনাময় তরুণ সমাজ আক্রান্ত হচ্ছে সর্বনাশা মরণনেশায়-সে নেশা মাদকের নেশা। ইতোমধ্যে বিশ^জরাগ্রস্ত এ নেশা আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষা, সভ্যতা, সংস্কৃতি, অগ্রগতি, প্রগতি ঝুলন্ত অবস্থায় আছে এই বিষাক্ত মাদকদ্রব্যের নীল দংশনে। বর্তমানে মাদকদ্রব্যের দংশনে যুবসমাজ তাদের দায়িত্ব হারিয়ে ফেলেছে। সে কারণে আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি, শিক্ষা, প্রগতিকে সচল রাখতে, অগ্রগতির ধারায় শরিক করতে হলে মাদকদ্রব্যের ভয়াবহ পরিণতি সর্ম্পকে সবাইকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। মাদকাসক্তির কুপ্রভাব আমাদের জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। যার ফলে এই মুক্ত সুন্দর সবুজ পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে আমাদের সম্ভাবনাময় যুবকরা গ্রহণ করছে মাদকদ্রব্য।
মানুষ মাত্রই সুখ-শান্তির প্রত্যাশী। সকলেই মুক্ত পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে উদার নীলাকাশ আর জ্যোৎ¯œা শোভিত রাতে কবি হতে চায়।। কিন্তু নানা হতাশা, ব্যর্থতা, বেকারত্বের অশুভ কালো ছায়া যুবসমাজকে নিয়ে যায় এ পথে। তাই তখন এ সুন্দর পৃথিবী তাদের হয় নরকের সমান। কাজেই নীতিহীন, বিবেকবর্জিত হয়ে মদ. গাঁজা, আফিম, পেথোড্রিন, ইয়াবা, হেরোইনের মতো মরণশোয় আসক্ত হয়ে পড়ে। সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যর্থতা, প্রেমে ব্যর্থতা, কুসংসর্গ প্রভৃতি কারণে যুব সমাজ মাদকাসক্তিতে আসক্ত হয়। বেছে নেয় আত্মহননের পথ।
কেবল শহরেই নয়, গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ছে এ মরণব্যাধি। এর ফলে আমাদের জনমক্তি নির্জীব হয়ে পড়েছে, বন্ধ হয়ে পড়ছে আমাদের প্রগতির পথ। ধর্মীয় মূল্যবোধ হারাচ্ছে, ধবংস হচ্ছে নীতিবোধ ও সামাজিক সম্পর্কের। ধীরলয়ে মঞ্চে আসছে এক নবিরবিহীন ধ্বংসের দৃশ্য এ জাতির ললাটে।
এ অবস্থার প্রতিকার করতে হবে আমাদের। এ ভয়ংকর নেশা থেকে মুক্ত করে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সরকারি, বেসরকারি সম্মিলিত প্রচেষ্টা। সম্মিলিতভাবে এ মরণনেশার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সচেতন করা, পারিবারিকভাবে প্রতিরোধ জোরদার , ধর্মীয় অনুভূতি সৃষ্টি করা, মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সকলের অংশগ্রহণই কেবল জাতিকে মুক্ত করতে পারবে। সুষ্টি হবে কর্মক্ষম যুব সমাজ, বাঁচাই দেশ ও জাতি। সবাইকে আবারো রক্তিম শুভেচ্ছা জানিয়ে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার আশা রেখে আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি। খোদা হাফেজ।
Previus
Next
Share This Post