মাইকেল মধূসুদন দত্ত - অনুচ্ছেদ। Gazi Online School
মাইকেল
মধূসুদন দত্ত
মাইকেল মধূসুদন দত্তকে বাংলা সাহিত্যের সেরা কবিদের একজন ও বাংলা অমিত্রাক্ষর কবিতার জনক হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৮২৪ সালেন ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার সাগরদাড়িতে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু জমিদার পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশী হয়েও ইংরেজী সাহিত্যের প্রতি তাঁর প্রবল আকর্ষণ ছিল। নিজ বাড়িতে ও কলকাতায় তিনি ইউরোপিয় সাহিত্য অধ্যয়ন করেন যা পরবর্তীতে তাঁকে বিপুলভাবে প্রভাবিত করেছিল। শৈশবকাল থেকেই তিনি ছিলেন অসাধারণ প্রতিভাবান ছেলে। বাংলা, সংস্কৃত ও তামিল- এই সমস্ত ভারতীয় ভাষা ছাড়াও ইতালীয় ও ফরাসি ভাষার মতো প্রাচীন ভাষাতেও তিনি বেশ দক্ষ ছিলেন। কিন্তু উনিশ শতকের প্রাথমিক পর্যায়ের রক্ষণশীল হিন্দু সমাজ তখন মাইকেলের এই বহুমুখী প্রতিভার প্রশংসা করার মতো উন্নত ছিল না। তাই তিনি ভাবলেন যে পশ্চিমা বিশ্ব হয়ত তাঁর এই সৃজনশীল প্রতিভার যথোপযুক্ত মূল্যয়ন করবে।
বাবা – মা ও আত্মীয় – স্বজনের আপত্তি সত্বেও ১৮৪৩ সালের ৯
ফেব্রুয়ারি তিনি খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন। ইংরেজ কবি লর্ড বাইরনের দ্বারা মধূসুদন খুবই
প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি তাঁর প্রাথমিক সাহিত্যকর্মের কবিতা ও নাটক, প্রায় সবটাই ইংরেজীতে
রচনা করেছিলেন। তাঁর সাহিত্যকর্মে উচ্চমাত্রার
বুদ্ধিমত্তা ও প্রতিভার বিকাশ থাকলেও ইংরেজ সমাজ তাঁকে মারাত্মকভাবে হতাশ করেছিল। তারা
মাইকেলের সাহিত্যকর্মে খুব বেশি আগ্রহ দেখায়নি। এরপর মাইকেল নিজ দেশের জন্য গভীর ভালোবাসা
অনুভব করেন ও “কপোতাক্ষ নদ” নামে বাংলা
ভাষায় একটি সনেট রচনা করেন। এই সনেট তাঁর জন্য খ্যাতি বয়ে আনে। এরপর তিনি তাঁর ভুল
বুঝতে পারেন ও তাঁর মাতৃভুমিতে ফিরে আসেন। তিনি তাঁর কবিতা ও সনেটে গভীর মনোযোগের সাথে
নিজ দেশ সম্পর্কে লিখতে শুরু করেন। বাংলায় প্রথম মহাকাব্য “মেঘনাদবধ “ তিনিই রচনা করেন।
বাংলা সাহিত্যে এটি একটি ব্যাতিক্রমধর্মী সাহিত্যকর্ম। ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন কলকাতায় তিনি
মারা যান।
Previus
Next
Share This Post