সামাজিক বনায়ন- অনুচ্ছেদ। Gazi Online School
সামাজিক বনায়ন
সামাজিক বনায়ন বনভূমি বৃদ্ধির একটি আধুনিকতম চিন্তাধারা।
এ পদ্ধতিতে সমাজের সকল ব্যক্তির সম্মিতলত প্রয়াসে বনভূমি গড়ে তোলা হয। সংজ্ঞা হিসেবে
বলা যায়, বনের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্রামীণ লোকজনের দ্বারা বসতভিটা, রাস্তার ধারে
কিংবা বাঁধের পাড়ে বা পাহাড়ি এলাকায় যে বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় তাকে সামাজিক বনায়ন
বলে। সামাজিক বনায়নের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ জনগণের
আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা। সামাজিক বনায়নের প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো; ক. কাঠ ও জ্বালানি কাঠের সরবরাহ বৃদ্ধি করা।
খ. গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক
উন্নয়ন সাধন করা। গ. পরিবেশের উন্নয়ন।
ঘ. ভূমির সবেৃাচ্চতম ব্যবহার ও উৎপাদন
নিশ্চিতকরণ। ঙ. দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন। চ. সবুজ উদ্ভিদের মাধ্যমে প্রাকৃতিক
ভারসাম্য বজায় রাখা। ছ. বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে জনজীবন রক্ষা করা। জ.
ভূমিক্ষয় রোধ করা। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বৃক্ষ সম্পদ বাড়ানোর উপায় হলো; ক. বসতবাড়ির
আশপাশে পতিত জমিতে বৃক্ষরোপণ করা। খ. পুকুর ও জলাশয়ের পাড়ে বৃক্ষরোপণ করা। গ. সড়ক,
রেলপথ, বাঁধ ও খালের ধারে বৃক্ষরোপণ তথা বনায়ন করা। ঘ. কৃষিবন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা।
সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি আজ একটি আন্দোলনের পরিণত হয়েছে। ১৯৭০- এর দশকের শেষের দিকে
দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ‘প্রথম সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি’ অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রথমে
উত্তরাঞ্চলে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি অন্তর্ভূক্ত হয়। উনিশ’শ আশির দশকের গোড়ার দিকে
দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কমিউনিটি ফরেস্ট্রি প্রকল্পের অধীনে সামাজিক বনায়নের ব্যাপক
কর্মসূচি ঢাকা, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলসহ সারাদেশে বিস্তৃতি লাভ কর। পরবর্তীতে সরকারের
বন বিভাগসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সামাজিক
বনায়ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করায় একটি একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপ লাভ করেছে।
Previus
Next
Share This Post